পদ্মাসেতু ষড়যন্ত্রের পেছনে ইউনুসঃ প্রধানমন্ত্রী
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে জার্মানি আওয়ামী লীগের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্দের ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছেন ড. মুহম্মদ ইউনুস। ইউনূসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধের হুমকি পাওয়ার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও নীতি নির্ধারকদের মতবিনিময়ের জন্য বিশ্বের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এই স্বতন্ত্র ফোরামের তিন দিনব্যাপী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন শুক্রবার বায়েরিচার হোফ হোটেলে শুরু হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন। তিনি সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের আমন্ত্রণে শুক্রবার সকালে মিউনিখে পৌঁছেন।
তিনি বলেন, “আমেরিকার অ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে এসে এসে সব সময় থ্রেট করত- ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ হয়ে যাবে। অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি রবার্ট ব্লেক একই কথা বলল। হিলারি ক্লিনটন আমাকে ফোন করল। সেখানেও একই কথা। এমনকি আমার ছেলে জয়কে তিনবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে ডেকে নিয়ে গেল। ওকে বলল, ‘তোমাদের অসুবিধা হবে। হিলারি এটা সহজভাবে নেবে না। তোমার মাকে বোঝাও।”
পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নে ২০১১ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে বিশ্ব ব্যাংক। একই বছর বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ) পদ থেকে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েও হেরে যান তিনি।গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ নিয়ে ইউনূসের ‘নানা তৎপরতার’ মধ্যে ২০১১ সালেই পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্ব ব্যাংক। তাদের শর্ত অনুযায়ী সৈয়দ আবুল হোসেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ছাড়তে বাধ্য হন, গ্রেপ্তার করা হয় একজন সচিবসহ সাত সরকারি কর্মকর্তাকে।এক পর্যায়ে বিশ্ব ব্যাংককে বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার।সম্প্রতি কানাডার একটি আদালতের রায়ে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার কথা প্রকাশের পর নতুন করে আলোচনায় আসেন ইউনূস।
প্রবাসী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করায় ক্ষতিগ্রস্তরা বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা করতে পারেন। মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি যে, দীর্ঘ যন্ত্রণার পর কানাডিয়ান আদালতের রায়ে আমরা ন্যায় বিচার লাভ করেছি।’
প্রতিক্ষণ/এডি/নাজমুল